Business F-Commerce

একটি এফ- কমার্স বিজনেস পেইজের খুঁটিনাটি বিষয়

f-commerce business

ফেসবুকের দ্রুত কোনো খবর ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নিশ্চয় আপনি জেনে থাকবেন। পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর পরই লবণ কেলেঙ্কারির কথা একবার ভাবুনতো। ঠিক এই কারণে ব্যবসার কাজে ফেসবুক ছাড়া গতি নেই। এফ -কমার্স এর এই ক্ষমতা আপনার বিজনেস এর প্রচারে দ্রুত এবং কার্যকর ভুমিকা রাখবে। 

ফেসবুক যে শুধু মাত্র দেশ বিদেশের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম, সেই ধরণা বদলে ফেলুন। ছোটো বড় কোম্পানিগুলো তো করছেই, সাথে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মানুষ এখন ফেসবুক, ফেসবুক পেজের সুবিধা নিচ্ছে।

আজকের টিউটোরিয়ালে থাকছে আদর্শ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং এই পেজ এর কিছু খুঁটিনাটি বিষয়! জেনে নিবো আদর্শ অফিসিয়াল এফ -কমার্স পেজ সম্পর্কে। কিন্তু তারও আগে যেটা জানা দরকার তা হলো, ”কেনো”? কেনো আমাদের পেজের দরকার হবে। এর কি আদৌও কোনো বিশেষ সুবিধা আছে? থাকলে সেই সুবিধাগুলো কি কি?

সুবিধা-

  • অগণিত বন্ধু রাখার সুযোগ- একটা ফেসবুক আইডিতে পাঁচ হাজারের বেশি বন্ধু রাখার সুযোগ নেই। একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বন্ধু, ক্লায়েন্ট এভাবে হিসাব করে রাখা যায় না। তাই ফেসবুক একাউন্ট সমাধান নয়। ফেসবুক পেজে বন্ধু রাখার কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকায় এফ -কমার্স পেজ ব্যবহার করতে পারেন।
  • সার্চে সুবিধা- ফেসবুক বা সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দিলে ফেসবুক পেজগুলো প্রথম দিকে আসে এবং খুব সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক পেজে এক্টিভ থাকলে মানুষ খুব সহজেই আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পাবে।
  • ট্যাগিং সুবিধা- ফেসবুক পেজ হলো নিজের বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য সবথেকে ভালো একটি উপায়। ফেসবুক পেজ থাকলে সেখানে সবাই চেকইন এবং ট্যাগ করতে পারে। তাই দ্রুত অন্যরাও পেজ সম্পর্কে জানতে পারে। ফেসবুক একাউন্টে এই সুযোগ নেই। 
  • ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব নেই- আপনি যখন চিন্তা করবেন আপনার পেজটি সর্বস্তরের মানুষের জন্য। অথবা আপনি কিছু জানাতে চাইবেন তখন আপনি আপনার পেজ ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি বাড়িয়ে নিয়ে পোস্ট দিতে পারবেন। তাই ব্যক্তিগত জীবনে কোনো প্রভাব নেই।
  • মনিটরিং সুবিধা- ফেসবুক পেজে থাকা অ্যানালিটিক্স থেকে আপনি জানতে পারবেন আপনার পোস্ট কাদের কাছে যাচ্ছে, প্রতিদিন কারা পেজটিতে আসছে, কারা লাইক অথবা ডিজলাইক করছে। তাই সুন্দরভাবে মনিটরিং করতে পারবেন। 
  • বিজ্ঞাপন দেওয়া- ফেসবুকে বিভিন্নভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়। রয়েছে বিভিন্ন পোস্ট বুস্ট করার সুবিধা। এতে অনেক মানুষের কাছে আপনার পোস্টটি পৌছে যাবে। তবে ব্যক্তিগত প্রফাইলে এই সুযোগ নেই।
  • অ্যাডমিন রাখা যায়- আপনার পেজটি পরিচালনার জন্য আপনার পছন্দের কাউকে পেজের অ্যাডমিন করে নিতে পারেন। তিনি আপনার হয়ে বিভিন্ন পোস্ট করতে পারবে। 

আদর্শ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ কি এবং এতে  কোন বিষয়গুলো অবশ্যই থাকতে হবে?

ফেসবুক পেজ হলো ফেসবুকেরই একটা ফিচার, যা ব্যবহারকারী বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারে। ফেসবুক পেজকে পাবলিক প্রফাইলও বলা যায়। সাধারণত পার্সোনাল কাজে, বিজনেসের জন্য বা সোসাল মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক পেজ ব্যবহার করা হয়।

সঠিক পরিচয় দিয়ে, যে ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয় তাকে  অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ বলা যায়। একটা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা আদর্শ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ অনেক বড় ভূমিকা রাখে। একটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ব্যবহারকারীর সঠিক পরিচয় অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। 

নিজের আইডেন্টিটি, ই-মেইল, কন্টাক্ট নম্বর সবকিছু হতে হবে আসল। তাছাড়া একটা সুন্দর কভার ফটো এবং প্রতিষ্ঠানের ইউনিক লোগো ফেসবুক পেজে ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত কন্টেন্ট, ছবি, ইনফরমেশন বা ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট পোস্ট করতে হবে। এগুলো অবশ্যই ইউজার-ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট হতে হবে। মনে রাখবেন ব্র্যান্ড লোগো, কভার, কালার, ট্যাগলাইন ও কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

ইউজার-ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট কি ?

গ্রহক সৃষ্টি এবং ধরে রাখার উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারী বান্ধব যে কন্টেন্ট, তাই User-friendly Content হিসেবে পরিচিত। বিষয়বস্তু বিপণন, ব্লগারদের উত্থান, এবং ওয়েবে সাংবাদিকতার গতিবিধির সাথে, আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি কন্টেন্ট দেখতে পাই। প্রকৃতপক্ষে, প্রতিদিন ইন্টারনেটে কয়েক মিলিয়নেরও বেশি ব্লগ পোস্ট এড হয়।

একদিকে, এটি ভালো খবর। অন্যদিকে, এটি একটি খারাপ খবর। কারণ এখন টিকে থাকা কঠিন এবং কঠিন হয়ে উঠছে। নতুন বিষয়বস্তুর নিখুঁত ভলিউম আপনার টার্গেট অডিয়েন্সকে যুক্ত করা এবং তাদের গ্রাহকে রূপান্তর করা কঠিন করে তুলছে।

ফলস্বরূপ, এখন আপনার পাঠকদের জন্য যতটা সম্ভব কার্যকরভাবে লেখা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ফেসবুক চেক করতে বা আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছ থেকে কেনাকাটা করার আগে আপনার পাঠকদের আকৃষ্ট করতে এবং তাদেরকে কাছাকাছি রাখতে আপনি কয়েক সেকেন্ডে সময় পাবেন।

ভাগ্যক্রমে, এটি সম্ভব। কিন্তু এটি করার জন্য, আপনার ভিজিটররা যেভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে অনুযায়ী আপনার বিষয়বস্তু তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। 

ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট এ কি কি থাকতে হয়?

কন্টেন্ট এ পাঠককে মূল্যবান এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা উচিত। তাদের অন্তত একটি বা দুটি জিনিস শেখানো উচিত বা তাদের অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া উচিত। পাঠকদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য যে কন্টেন্ট এ দেওয়া হয় তাই Informative content.   

বিষয়বস্তু কোথায় প্রকাশিত হবে (যেমন একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট, বা সোশ্যাল মিডিয়া) এবং বিষয়বস্তুর মূল উদ্দেশ্য কী তার উপর নির্ভর করে এটি সাজানো হয়। তথ্যগুলি সাধারণ তথ্য হতে পারে যেমন আপনি একটি ব্লগ পোস্টে খুঁজে পাবেন। কৌশলগত তথ্য যা আপনি একটি ওয়েবসাইট বা বিজ্ঞাপনে খুঁজে পেতে পারেন।

যদি কন্টেন্ট এর মূল উদ্দেশ্য কোন কোম্পানির দেওয়া পণ্য এবং পরিষেবাগুলি দেখানো হয়। তাহলে প্রদত্ত তথ্যে পাঠককে এই পণ্য এবং পরিষেবাগুলি কী করে এবং কেন সেগুলি উপকারী তা শেখানো উচিত। 

যদি কোনো কন্টেন্ট এর উদ্দেশ্য হয়, কোনো নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে যাওয়া । তাহলে প্রদত্ত তথ্য পাঠককে বলবে কেন তাদের এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে এবং ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা জরুরি।    

ব্র্যান্ড লোগো, কভার, কালার, ট্যাগলাইন যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মূল বিষয়বস্তুরও আগে মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী। বিষয়ের উপর মানুষ আকর্ষণ তখনই বোধ করে যখন তার সৌন্দর্য মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই ভিজিটরদের আকর্ষিত করতে ফেসবুক পেজ সুন্দর ভাবে সাজাতে হয়। লোগো, কভার সবসময় প্রতিষ্ঠান বা পণ্যের সাথে মিল রেখে করতে হবে।

লোগো, কভার ফটো, কালার মুলত ভিজিটরদের রুচি বিবেচনা করে করা হয়। ভিজিটর যাতে আপনার পেজে স্থায়ী হয় এবং পেজে ট্রাভেল করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। তাই লোগো, কভার কালার বেঁছে বেঁছে সিলেক্ট করতে হবে।

Tagline এমন হবে যা দেখেই পাঠক পড়তে শুরু করে। mere-exposure effect নামে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা রয়েছে। যার মধ্যে আমরা যেসব বিষয়ের সাথে পরিচিত সেই জিনিসগুলোকে অগ্রাধিকার দেই। Tagline এ গ্রাহকদের জন্য স্বরণীয় এবং এরকমই mere-exposure effect এড করে নিয়ে আসতে হবে। 

এফ-কমার্স বিজনেসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কি কি রুলস অনুসরণ করতে হবে?

যে সকল প্রতিষ্ঠান বর্তমানে এফ-কমার্স বিজনেস করছে এবং পরবর্তীতে করতে আসবে তাদের অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন নিতে হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের BIN নম্বর মন্ত্রণালয়কে জানাতে হয়। যাতে মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনে ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট বন্ধ বা সচল করতে পারে।     

ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত নতুন ডিজিটাল ই-কমার্স নির্দেশিকা ২০২১ জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

নির্দেশিকা

  • পণ্য কেনার জন্য ক্রেতা মূল্য পরিশোধের পর নির্ধারিত সময়ে যদি পণ্য সরবরাহ করতে না পারে, তবে মূল্য পরিশোধের ১০ দিনের মধ্যে ক্রেতার সব টাকা ফেরত দিতে হবে।
  • একই শহরে ৫ দিনের ভেতর, আর ভিন্ন শহরে থাকলে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছাতে হবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে সময় আরও কম করতে হবে।
  • বিক্রেতা কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে পণ্য পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে ক্রেতা যে মাধ্যমে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করেছে সেই মাধ্যমেই তা ফেরত দিতে হবে।
  • প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে পণ্য বা সেবা সংক্রান্ত সকল খরচের কথা এবং মেয়াদোত্তীর্ণের সময় স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। কোনো নকল বা ভেজাল পণ্য দেওয়া যাবে না।
  • অভিযোগ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয়  ফোন নম্বর, ই-মেইল বা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যম উল্লেখ করতে হবে। অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। অভিযোগ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।
  • এছাড়া পণ্য বা সেবার বিষয়ে মতামত জানানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এসব মতামত মুছে দেওয়া যাবে না। 
  • নির্দেশিকা পালন না করলে অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার লাইসেন্স বাতিল করে দেবে।

শেষ কথা

নতুন করে এফ-কমার্সে ফেসবুক পেজের গুরুত্ব বুঝানোর নেই। ‘কন্টেন্ট ইজ কিং’, কথাটা কন্টেন্ট এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে। কন্টেন্ট বা পরিসেবা সম্পর্কে তথ্য আপলোড দেওয়ার মাধ্যম ফেসবুক পেজটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে, গুছিয়ে ভিজিটরদের আগ্রহ তৈরি এবং গ্রাহকে পরিণত করার কৌশল। আজকের ব্লগে একটি আদর্শ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ কোন বিষয়গুলো থাকে তা জেনেছেন। 

একটি আদর্শ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ নিয়ে কোনো প্রকার জিজ্ঞাসা বা সহায়তার প্রয়োজনে Zovogeeks এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

www.zovogeeks.com

আমাদের হেল্পলাইনঃ +8809696791592 ( 10 AM to 11:30 PM) , help.com.de

আমাদের ফেসবুক মেসেজ হেল্পলাইনঃ m.me/Zovogeeks, m.me/Zovocare

আমাদের ই-মেইল হেল্পলাইনঃ 

zovocare@gmail.com,  zovogeeks@gmail.com, support@zovogeeks.com

Author

ZovoGeeks

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *